দেশজুড়ে ধর্ষণ উত্‍সব এবং কিছু কথা


আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় ৯ মাসে প্রায় ২ লাখ নারী ধর্ষিত হয়েছিল ।শুধু ধর্ষণ করেই পাকিস্তানী শুওরগুলি ক্ষান্ত হয়নি ।ধারালো ছুঁড়ি দিয়ে স্তনের বোঁটা কেটে ফেলতো ।
ধর্ষণ শেষে বেয়নট দিয়ে খুঁচিয়ে যৌনাঙ্গ ছিড়ে ফেঁলতো ।
ইদানিং দেখা যাচ্ছে,
পাকিস্তানী হানাদারদের মতো বাংলাদেশের আনাচে কানাচে অসংখ্য ধর্ষক জন্মেছে ।
৮ মাসের শিশু থেকে শুরু করে ৭০ বছরের বৃদ্ধাও ধর্ষণ থেকে রেহাই পাচ্ছেনা !
এই তো কিছুদিন আগের কথা,
দুপুরে খেয়ে দেয়ে ৭১ টিভিতে খবর দেখতেছিলাম ।
খবরের একদম শেষ পর্যায়ে একটা খবর দেখে আমার মেরুদন্ড দিযে একটা শীতল বাতাস চলে গেল যেনো !
মাত্র ২২ মাসের শিশু ধর্ষিত !!
ব্যাপারটা দেখছেন ?
একটা স্বাধীন,সার্বভৌম,রক্ত দিয়ে পাওয়া একটা ভূখন্ডে এসব কি হচ্ছে ?
প্রতিদিন খবরের কাগজ আর টিভিতে যে হারে ধর্ষণের খবর আসছে সেটাকে ধর্ষণ উত্‍সব ব্যতীত আর কি বলা যায় বলুন ?
আজকে দুটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজবো আমরা চলুন-
১।
ধর্ষণ বেড়ে যাওয়ার কারন কি ?
২। ধর্ষণের জন্য কি ধর্ষক দায়ী নাকি অন্য কিছু ?
একটা দেশের জ্বালানী শক্তি কি বলেন তো ?
একটা দেশের জ্বালানী শক্তি হচ্ছে তার সংস্কৃতি ।
অত্যন্ত দুঃখের কথা হচ্ছে,
আমাদের জ্বালানী শক্তি অনেক আগে থেকেই ফুরিয়ে আসতেছে ।এখন প্রায় বিলুপ্ত ।
বাংলাদেশ ভূখন্ডের প্রায় ৪ হাজার বছরের ইতিহাস,ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি আজ প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে ।
কে বা এসব মনে রাখবে ?
হাল জামানার মেয়ে ছেলেদের ভাব দেখেছেন ?
পারেনা ঠিকমতো বাংলা বলতে,পড়তে ও লিখতে,আবার পটর পটর ইংরেজী বলে ।
ব্যাপারটা এমন হয়ে গেছে যে,
কথায় কথায় ইংরেজী বলাটা একটা ফ্যাশন,আধুনিকতার প্রতিক আর আমার মতো যারা প্রাণের বাংলা ভাষায় কথা বলতে গিয়ে ভাব দেখাতে কোন ইংরেজি টেনে আনেনা তারা এক নম্বর ক্ষ্যাত ও আন ইসমার্ট ।
আমাদের রফিক,জব্বারদের রক্ত দিয়ে কেনা ভাষাকে এই প্রজন্ম ক্ষ্যাত ভাষা বানিয়ে ফেলেছে ।
মুঠোফোনে বার্তা থেকে শুরু করে কথা বার্তা সবখানে বাংলাকে খাটো করে আর ইংরেজী ও হিন্দীকে উঁচু করে দেখা হয় ।
সবচেয়ে খারাপ অবস্থা প্রেমিকা নামক খানকিগুলির ।
উনাদের কাছে ইংরেজী বলতে পারাটা একটা বিদ্যা,শিক্ষা ও জ্ঞানের পরিচয়ক ।
যদি কোন ছেলে বাংলার ভেতর দুই একটা ইংরেজী পট পট করে বলতে না পারে তাহলে মেয়েরা তাকে পাত্তা দেয়না ।
মাতৃজাতির মাতৃভাষার প্রতি এরকম অবহেলা এই জাতির ইতিহাসকে কলংকিত করেছে ।
শুধু কি ভাষাতেই ?

বাঙালীর হাজার বছরের পরিবার ব্যবস্থা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে ।
আগে দেখা যেতো,ছেলে মেয়ে বাবাকে বাঘের থেকে বেশি ভয় পেতো ।বাবার পায়ের শব্দে তাদের কলিজা শুকিয়ে যেতো ।বাবা ও সন্তানদের এইটুকু দূরত্বই সন্তানদের মানুষ বানাতো ।
কিন্তু আফসোস,
প্রজন্ম তাদের পাপা,ড্যাড ও আব্বুদের সাথে একসাথে বসে হিন্দী সিরিয়াল দ্যাখে,
মেয়েরা বাবার সামনে রিমুট নাঁচিয়ে নাঁচিয়ে হিন্দী মুভি দ্যাখে ।
অথচ আগেকার সমাজের সভ্য মানুষেরা কোনদিন বাবার সামনে ঠিকমতো কথা বলতে পারেনি শুধু ভয়ে ।এখন সেই ভয় নেই ।পিতা পুত্রের সম্পর্ক হয়ে গেছে এখন বন্ধু ! প্রিন্ট মিডিয়া তাতে বাতাস দেয়,বেরিয়েছে বাবা দিবস আরো কত কি ।
ধর্ষণের জন্য শুধু ধর্ষকের লিঙ্গ দায়ী নয় এসবও দায়ী ।কৈ কোন চুশীলকে তো সংস্কৃতি বিপর্যয়ের এ দিকটা নিয়ে বলতে শুনিনা ।
প্রত্যেকটা চুশীল মাদারচোদ ধর্ষণের খবর শুনলেই ধর্ম,পুরুষবাদ,নারীবাদ,
কাপড়চোপড়ের কথা তুলে আনে ।
এদেশের কিছু বুদ্ধিজীবী পয়দা হয়েছে,কিছু সাহিত্যিক জন্ম নিয়েছে যারা পুঁজিবাদের পা চাটা গোলাম ।এরাই এই ধর্ষণের জন্য দায়ী ।এসব ভোদাই পাবলিক সংস্কৃতি বাঁচাতে চেষ্টা না করে বুদ্ধিজীবী এটাকে প্রগতিশীলতা বলে আর সাহিত্যিক মদের আসর নিয়ে পড়ে থাক ।
সব শালা বেঈমান,এই দেশ,এই দেশের স্বাধীনতা,সংস্কৃতি ঐতিহ্য নিয়ে কোন কুত্তারবাচ্চা ভাবেনা ।
আমাদের দেশের নারীরা আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্যের অন্যতম স্রষ্টা ।
এই সংস্কৃতি,এতো ঐতিহ্য,কষ্টের ভাষা আর রক্তাক্ত জাতির পতাকা সবখানেই নারীর অবদান আছে ।
কিন্তু আফসোস,
এখন নারী সমাজের অবস্থা দূষিত হয়ে গেছে ।পঁচে গেছে সমস্ত নারীকূলের চেতনা ।
তাদের সমস্ত জ্ঞান,মেধা,প্রজ্ঞা আর চেতনা গিয়ে ঠেকেছে অর্থ,রূপ আর প্রেমেতে !
আমাদের সংস্কৃতির বাহক মেয়েরা কোনদিন সেনোরা ব্যবহার করেনি,কৈ কোনদিন তো শুনিনি আমাদের আগেকার কোন মা তার স্তনের গঠন ঠিক রাখতে গিয়ে সন্তানকে দুধ খাওয়ায়নি ।
এখন এসব অহরহ ।
আমাদের মা চাচীরা আমাদের বুদ্ধি বাড়ানোর জন্য শাক সবজি খাওয়াতো,আর এখন তো হরলিক্স খাওয়ায় ।হরলিক্স একটা ফ্যাশন হয়ে গেছে ।
আমাদের পূর্বমহিলাদের সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে পেট কাটা (সিজার ) লাগতো না ।


তারাই তো রবীন্দ্রনাথ,নজরুল,জীবনানন্দ,শেখ মুজিব,বেগম রোকেয়া,জাহানারা ইমামদের জন্ম দিয়েছে তাই না ?
আর এখনকার মায়েরা জন্ম দিচ্ছে পুঁজিবাদী নষ্ট ভ্রষ্ট,সংস্কৃতিহীন,মূর্খ,দেশপ্রেমহীন সন্তান ।
যে মেয়ে যৌবনে বেশ্যামি করে বেড়িয়েছে তার সন্তান কিভাবে দেশপ্রেমিক হবে !
যে মেয়ে জ্ঞানের চেয়ে বেশি চেনে সেনোরা,যে মেয়ে প্রজ্ঞার চেয়ে বেশি দাম দেয় রূপকে,যে মেয়ে প্রেমের চেয়ে বেশি মূল্য দেয় সেক্সকে- তাদের গর্ভ থেকে ধর্ষক ছাড়া আর কি বা আশা করা যায় ।
এইসব ধর্ষণ ও ধর্ষক সবকিছুই সংস্কৃতি বিপর্যয়ের ফলে তৈরি হচ্ছে ।আর এতোবড় একটা ব্যাপারকে এড়িয়ে যাচ্ছে প্রত্যেকটা চুশীল ও ভদ্র মানুষ ।
তা না করে যদি সরকার,জনগন,গোটা সমাজ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষায় সচেষ্ট হতো তাহলে অন্তত আজ এই ধর্ষণ উত্‍সব দেখতে হতো না আমাদের ।
সংস্কৃতি বিপর্যস্ত একটা জাতি ধর্ষণ করবে,এটা খুব স্বাভাবিক ।
আমাদের এই বাংলা মা,ভাষা,পতাকা সবকিছুইতো ধর্ষিত হয় প্রতিদিন ।
হুমায়ূন আজাদ একটা কথা বলেছিলেন,
একদিন সবকিছু নষ্টদের অধিকারে চলে যাবে...।।


Comments

Popular posts from this blog

ফিঙ্গারিং

বাঁকা লিঙ্গ সোজা করার সর্বকালের শ্রেষ্ঠ টিপস

☬ রক্তদানের ১৩০ টি স্লোগান ☬