বরাবর "রূপা"
বরাবর "রূপা"
___
রূপা,
"কেমন আছো ?" বলে আর নিজেকে ছোট করবোনা ।ভাল থাকার মতো সবকিছুই তোমার আছে ।খারাপ থাকার কোন যুক্তি নেই ।যে মানুষ স্বার্থপর হতে পারে সে সুখেও থাকতে জানে ।সুখ থাকেই ছুঁয়ে যায় ।
এই হিসেবটা জানি কিন্তু স্বার্থপর হতে পারিনা ।
যদি পারতাম আজ তাহলে তোমার থেকে বেশি সুখে থাকতে পারতাম আমি ।
তুমিই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে,"যে আমাকে এতো ভালবাসলো তাকে আমি কি করে ভুলি বলো ?"
এখন কি ভুলে আছো না ?
খুব তো বড় কন্ঠে বলতে,"সব ঠিক হয়ে যাবে ।"
কৈ কিছুই তো ঠিক হয়নি ।তোমার তা অবশ্য সব ঠিক হয়েছে ।আমারতা আর হয়নি ।আমি ঠিক করতে কখনো চাইনি ।আমি শুধু তোমাকে চেয়েছিলাম ।তার জন্য আমাকে চির অসুখী হতে হবে জানতাম না ।
তুমি দাবী করো যে তুমি আরেকটা সম্পর্ক করোনা অথচ আমি ফিরে আসতে বললেই বেঁকে যাও ।কেন হুম ?
আমাকে হিমু বানিয়ে,খালি পায়ে হাঁটা শিখিয়ে এখন কেন শাহরুখ খান হতে বলো ?
তোমার হাত ধরেই তো লেখার জগতে ঢুকেছি ।এখন কেন আমাকে অন্য আর দশটা ছেলের মতো হতে বলো ?
শুরুতে কি হুঁশ ছিলনা ?
আসলে আমায় তুমি কখনো ভালোই বাসোনি ।এই দেশের হিমু সিরিজ পড়া প্রতিটা মেয়েই রূপার মতো ভাব নিতে চায় ।তোমারো ইচ্ছে হয়েছিল ।তোমার ইচ্ছা পূরণের বলি হয়েছি আমি ।আমি হিমু হয়ে গেছি কিন্তু তুমি রূপা হয়ে থাকলেনা !
কত বড় একটা ঠকা দিলে আমায় তুমি ! ভাবতেও কষ্ট হয় ।
আমি তোমাকে সমস্ত আদিমত্বের মিশ্রণে ভালবেসেছিলাম ।আমার এই ভালবাসা এখন তোমার অপছন্দ,অস্বীকার করো আমার সমস্ত ভালবাসা কে ।
আমার বুঝা হয়ে গেছে তোমার কাছে ভালবাসার সংজ্ঞা কি ।
ভাল তো ।এখন সব মেয়েই অমন ছেলে চায় মাঝখান দিয়ে কপাল পোড়ে আমার মতো বোকা ছেলেদের যারা স্বার্থপর হতে পারিনা,নিজের সুখের চেয়ে অন্যের সুখটা বেশি ভাবি ।
পিছনে তাকিয়ে দ্যাখো একবার,তোমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন কঠিন সময়গুলিতে আমি তোমার পাশে ছিলাম ।তোমাকে সবসময় ভাল একটা জায়গায় আমি কল্পণা করেছি ।কল্পণা করেছি যে তুমি বড় কিছু হবে ।তোমাকে সে পথে আমি ঠিকই হাঁটিয়ে দিতে পেরেছি কিন্তু মুখ থুবড়ে পড়ে গেছি আমি নিজেই !
তোমার কি উচিত ছিলনা আমাকে টেনে তোলা,নিজের সাথে করে নিয়ে চলা ?
পারতেনা বলো ?
পারার কথা ছিল ।তবুও অকৃতজ্ঞের মতো আমাকে ছেড়ে দিলে ।আমি বারবার ফিরতে চেয়েও প্রত্যাখিত হচ্ছি ।
একাকিত্বের তীব্র যাতনায় অনুভূতির সমস্ত দেয়ালগুলিতে মড়চে পড়ে গেছে রূপা তবু তোমার মন গলেনি !
তোমাকে আমি কখনো ছোট করে দেখিনি ।সবসময় সম্মান ও ভালবাসার চোখে দেখেছি ।তাতেও তোমার বিশ্বাস কুড়াতে ব্যর্থ আমি ।ভেবেছো কোন একদিন আমিও ছুঁড়ে ফেলে দিবো তোমাকে তাইনা ?
ছিহ রূপা ।এতোটা কাছাকাছি আসার পরও চিনলেনা !
তুমি আসলে খুব স্বার্থপর ।আমি ছিলাম তোমার একাকিত্বের প্রয়োজন ।আমাকে ভীষণভাবে ব্যবহার করেছো ।
কেন করেছো ?
আমি কি কোনকালে তোমার কোন ক্ষতি করেছিলাম !
তাহলে আমার এতোবড় ক্ষতি কেন করলে ?
সবকিছু ছেড়ে দিতে পারি আমি শুধু তোমাকে ছাড়তে পারিনা আমি ।
মগজের প্রতিটা কোষ,হৃদপিন্ডের প্রতিটা রক্তকণায় তোমার অস্তিত্ব এখনো বিদ্যমান ।প্রায়ই নয়,সবসময় মনে পড়ে তোমাকে ।
গভীর রাতে নয়,ভরদুপুরেও ভাবি তোমায় ।
তোমার ভাবনা ছাড়া একটা দিন কাটেনা আমার ।
আর ভাবি,তুমি আবার ফিরে আসবো ।আমাকে দেখতে চাইবে ।আমার জন্য অনেক চকলেট নিয়ে আসবে ।আমার দিকে তাকাবে তুমি ।আমরা দুজন হাঁটবো পায়ে পায়ে ।
তোমার মনে পড়ে রূপা ?
তুমি বলতে,তুমি চিরদিন আমার পায়ে পা মিলিয়ে হাঁটবে ।
আজ তুমি অন্যের পায়ের সাথে পা মিলাচ্ছো ।খুব কষ্ট হয় ভেবে রূপা ।এতোটা ক্ষতি কি আমি তোমার করেছিলাম ?
আমার প্রতিশ্রুতিগুলি আমি রেখেছি ।তোমার কাছে কথা দিয়েছিলাম,আমৃত্যু আমি তোমাকে ভালবেসে যাবো ।
তুমি কেঁদে কেঁদে সারাক্ষণ অস্থির থাকতে ।শুনতে চাইতে আমার কাছ থেকে এসব কথা ।রাতে দুঃস্বপ্ন দেখে সকালে আমার কাছে কেঁদে কেঁদে বলতে,"আবিদ কোনদিন আমাকে ছেড়ে যাবেনা তো ?"
আমি তোমার সমস্ত জীবনের দায়িত্ব নিয়েছিলাম রূপা ।
হ্যা অনেকদিন হলো তোমাকে কোন গিফট দিতে পারিনা ।আসলে আমি একটু সমস্যায় আছি ।আগে নিজের দরকারে পরিবারের সবার কাছে টাকা চাইতাম ।দিতো ।এখন চাইনা ।দেয়ওনা ।তোমাকেও আর গিফট দেওয়া হয়না ।এর জন্য আমি ক্ষমা চাই ।তবে হ্যা, আমি যখন চাকরি পাবো তখন আবার গিফট পাঠাবো ।
আমি কিছুই ভুলিনি বোকা মেয়ে ।আমার সবকিছু মনে থাকে ।
ভুলে যাওয়ার সমস্যাটা তোমার আছে ।তোমাকে আমি গুণে গুণে ৫ টা লাল টকটকে গোলাপ দিয়েছিলাম ।ভুলে গেছো তাইনা ?
রূপা রে, তুমি ছিলে আমার প্রথম প্রেম,প্রথম ভালবাসা ।আমি ছিলাম খুব কাঁচা প্রেমিক ।অনেক কিছু বুঝতাম না তবুও তো বেশ মানিয়ে নিয়েছিলে আমার সাথে ।আমি চুমু খেতে লজ্জা পেতাম আর বলতাম একদিন লজ্জা শরম ভুলে যাবো ।তুমি বলতে,একদম না ।লজ্জাহীন হতে হবেনা ।
তুমি ভাবতে,যদি লজ্জাহীন হই তবে আর দশটা ছেলের মতো হয়ে যাবো আমি ।
তুমি আমাকে স্রেফ হিমুর চোখেই দেখতে ! এখন তো হিমুর মতোই হয়ে গেছি ।অনেক পরিণত হিমু ।রাঁস্তায় রাঁস্তায় খালি পায়ে হেঁটে বেড়াই ।খুব লজ্জাহীন হয়ে গেছি রূপা ।ক্ষমা করে দিও ।
আচ্ছা রূপা,
তুমি কি আর কোনদিন ফিরবেনা ?
কথা দিয়েছিলে তো আসবে ।এখনো কি আসার সময় হয়নি ?
আমার খুব তোমার কাছে আসতে ইচ্ছে করে ।আসতে পারিনা ।একটা চাকরি পেলে আসবো ।কটা গোলাপ কেনার টাকা যদি হাতে না থাকে তবে এসে কি করবো বলো ?
সবসময় তো হিমুগিরি করা যায়না ।মনটা চিরদিন হয়তো হিমুর মতো থাকবে,পরণে ঠিকই হলুদ পান্জাবী থাকবে শুধু পায়ে স্যান্ডাল থাকবে ।
খালি পায়ের মানুষরা তো বিয়ে করেনা ।আমি তো তোমাকে বিয়ে করতে চাই ।বিয়ে করার জন্য যেদিন রাজি হবে,কথা দিচ্ছি ঠিক সেদিন থেকেই স্যান্ডাল পরা হিমু হয়ে যাবো ।তোমার গোলাপী ঠোঁটে চুমু দিতে পারবো অবলীলায় ।
-হিমু
(তোমার পাগলটা)
Comments
Post a Comment